ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কংশ নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসত-ভিটা ও ফসলি জমি। বর্তমানে পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র স্রোতে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে ভিটে-মাটি, আবাদি জমি, তিল তিল করে গড়ে তোলা সাজানো স্বপ্ন।
গত কয়েকদিনের ভয়াবহ ভাঙনের তীব্র আতঙ্কে আছে নদী তীরবর্তী বসবাসরত পরিবারগুলো। ভাঙন রক্ষা করা না গেলে হারিয়ে যাবে উপজেলার স্বদেশী ও পার্শ্ববর্তী শাকুয়াই ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী বসত-ভিটা ও ফসলি জমি। ভাঙন প্রতিরোধে বাঁশ ডালপালা দিয়ে ভাঙন রক্ষার শেষ চেষ্টা করছে এলাকাবাসী।
২৩ আগস্ট সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কয়েক দফায় আকস্মিক ভাঙনে স্বদেশী ইউনিয়নের নাশুল্ল্যা নদী পাড়ের কয়েক একর ভূমি নদীগর্ভে চলে গেছে। প্রায় ৫০টি পরিবার ভিটামাটি হারিয়ে গৃহহীন হয়েছেন। অনেক পরিবার আগে থেকেই তাদের টিনের ঘর, আসবাবপত্র, গরু-ছাগল নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন।
অপর অংশে শাকুয়াই ইউনিয়নের বালিপাড়া এলাকায় গ্রামীণ রাস্তার মাটি সরে গিয়ে ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে। ঠিক পাশেই ওট্রিপাড়া এলাকায় প্রবল স্রোতে ফসলি জমি ধ্বংস করে জেগে উঠেছে চর।
অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে নাশুল্ল্যা এলাকার নদী তীরবর্তী বাসিন্দা শিউলী খাতুন বলেন, ‘অনেকে আয়ে দেখ্যাইয়া যায়। কিছুই তো করে না। বছরে বছরে থাহনের ঘর সরাইন লাগে। আমরার লাইগ্যা কিছু একটা করুইন যে।’
একই এলাকার বাসিন্দা জুলহাস মিয়া জানায়, ৩ কাঠা জমি ছিল, চোখের সামনে সবটুকু নদীগর্ভে বিলীন। ভয়ে পরিবারের সকলকে নিয়ে অন্যত্র চলে এসেছি। প্রতিবেশী এক ভাই সব হারিয়ে এখান বিদায় নিয়েছেন।
আক্ষেপ করে তিনি আরও জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন বলেন, আমি এ বিষয়ে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি চাইবো দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধ নির্মাণের কাজ যেন শুরু হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রেজাউল করিম বলেন, ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সঙ্গে সমন্বয় করে ভাঙন রোধে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে।
নদী ভাঙনের ব্যবস্থা গ্রহণকল্পে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুসা মুঠোফোনে জানান, আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। ভাঙন কবলিত এলাকায় লোক পাঠাবো বিষয়টি দেখার জন্যে। পরিদর্শন করে বলতে পারব কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন হবে।
Leave a Reply