কেশবপুরের মেয়ে আনোয়ারা খাতুন (২৫) কে ৫ দিন যাবত ঘরের মধ্যে আটকিয়ে পায়ে শিকল বেঁধে পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনাটি যেন মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। দূর্বৃত্ত স্বামীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদই অসহায় আনোয়ারার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। জীবন বাঁচাতে অন্ধকার রাতে শিকল কেটে পালিয়ে আসা আনোয়ারা বর্তমানে কেশবপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তি আনোয়ারা খাতুন এই প্রতিনিধির কাছে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন ও স্বামীর অন্ধকার জীবনের কাহিনী তুলে ধরে বলেন, প্রায় ৮ বছর আগে তার পিতা কেশবপুর উপজেলার সন্যাসগাছা গ্রামের এনায়েতুল্যা মোল্যা পাশ্ববর্তি উপজেলা ডুমুরিয়ার চাকুন্দিয়া গ্রামের আবুল গুলদারের সাথে তার বিয়ে দেয়। বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন তার স্বামী রাতের পার্টি ও নেশা করে। প্রতিদিন সে সন্ধ্যার আগে বাড়ী থেকে বের হতো আর শেষ রাতে নেশা করে বাড়ী ফিরত। কারন জানতে চাইলে তার উপর নেমে আসত অমানুষিক নির্যাতন। সবকিছু জেনেও তিনি গরীব মা-বাবা ও তার সংসারের কথা চিন্তা করে স্বামীর সকল অন্যায় অত্যাচার মূখ বুজে সহ্য করেছেন। সম্প্রতি তার স্বামীর অপরাধমূলক কর্মকান্ড ও মাদক সেবনের মাত্রা বেড়ে যায়। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় গত ৫ দিন ধরে তার স্ত্রীকে পায়ে লোহার শিকল দিয়ে ঘরের মধ্যে আটকিয়ে রাখে। ভিকটিম বলেন প্রতিদিন সে নেশা করে এসে তার উপর অমানুষিক অত্যাচার চালাতে থাকে। এমনকি তাকে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। শিকলের চাবি সে তার কাছে রাখত, যাতে করে আমি পালাতে না পারি। গত ১৭ অক্টোবর রাতে স্বামী বাড়ীতে না থাকার সুযোগে তিনি জীবন বাঁচাতে পায়ের শিকল কেটে পালিয়ে বাপের বাড়ীতে আসেন। রবিবার (১৮ অক্টোবর) পরিবারের লোকজন পায়ে শিকলবস্থায় তাকে কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি করে।
আনোয়ারার পিতা এনায়েতুল্যা সাংবাদিকদের বলেন, তার জামাই একজন ভয়ংকর সন্ত্রাসী ও নেশাখোর। মেয়ে ও তার পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে জামাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে সাহস পাচ্ছেন না। মামলা করলে তার পরিবারের লোকদেরকে হত্যা করা হবে বলে সে বিভিন্নভাবে হুমকী অব্যাহত রেখেছে।।
Leave a Reply