কেশবপুরে ঘুমন্ত মা ও ছেলেকে হত্যা চেষ্টা ও বসতবাড়ী ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হামলাকরীদের বিরুদ্ধে কেশবপুর থানায় অভিযোগ হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, স্বামীর স্বীকৃতি আদায়সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রামের মৃত জোহর আলী সরদারের ছেলে রফিকুল সরদারের সাথে তার ২য় স্ত্রী রাশিদা বেগমের দীর্ঘ দিন ধরে বিবাদ চলে আসছিল। প্রায় ১০ বছর আগে একই এলাকার পির আলী সরদারের মেয়ে রাশিদাকে ২য় বিয়ে করে রফিকুল। বিয়ের পর সে রাশিদাকে নিয়ে প্রায় ৮ বছর পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে অবস্থান করার পর ৮ মাস পূর্বে বাড়ীতে ফিরে আসে। এর মধ্যে রফিকুল কৌশলে তার কাছ থেকে প্রায় ৭/৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। পূনরায় টাকার চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হলে সে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে তাকে তার বাড়ী থেকে বিতাড়িত করলে রাশিদা তার বাপের বাড়ীতে টিন সেডের একটি বাড়ী তৈরি করে সেখানে তার প্রথম পক্ষের ছেলে ওমর ফারুক কে নিয়ে বসবাস শুরু করে। বাপের বাড়ী অবস্থান করেও সে মাঝে মধ্যে স্বামীর স্বীকৃতি আদায়ের জন্য শ্বশুর বাড়ীতে অবস্থান করলে তার পাষন্ড স্বামী, ও প্রথম স্ত্রীর ভাইয়েরা মিলে তাকে অমানুষিক অত্যাচার, নির্যাতন করত। এক পর্যায়ে স্বামীর দাবি আদায়ে রাশিদা রফিকুলের বিরুদ্ধে গত দেড় মাস আগে কেশবপুর থানায় একটি মামলা করেন, যা বিচারাধীন রয়েছে। স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করা রাশিদা ও তার ছেলের জন্য কাল হয়ে দাড়ায়। মামলার কারনে প্রায়ই তাকে রফিকুল সহ তার প্রথম স্ত্রীর ভায়েরা প্রানে মারার হুমকী দিত।
এই ঘটনার জের ধরে রাশিদা ও তার ছেলেকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে মঙ্গলবার গভীর রাতে রফিকুলের নেতৃত্বে তার শ্যালক আব্দুস সবুর, আব্দুল কুদ্দুস, কুদ্দুসের ছেলে লিটন, সবুরের ছেলে জোবায়ের হোসেন তুহিন, এজাহার আলীর ছেলে লিটন সহ ১০/১২ জন ভাড়া করা সন্ত্রাসী প্রথমে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘুমন্ত রাশিদা ও তার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চলায়, ভাংচুর করে ঘরের দামি আসবাবপত্র, বারান্দার বেড়া ও রান্না ঘরের ব্যবহৃত জিনিসপত্র। এ সময় হামলাকারীরা আলমারী থেকে নগদ ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, একটি স্বর্নের চেইন, এক জোড়া কানের দুল ও হাতের বালা লুটপাট করে। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পর প্রতিবেশীরা মৃত ভেবে ফেলে রাখা রাশিদা ও তার ছেলে ওমর ফারুককে মূমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় আহত রাশিদা বেগম বাদী হয়ে বুধবার লিটন, তুহিন, সবুর ও কুদ্দুসের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে কেশবপুর থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।
কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জসিম উদ্দীন জানান, এই ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply