নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি
কাক ডাকা ভোরের আলো ফোটার আগেই ওএমএসের বিক্রয় কেন্দ্রের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ছেন পুরুষ,মহিলা থেকে শুরু করে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা। চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে বেশীরভাগ মানুষ ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে । বরাদ্দ ও বিক্রয়কেন্দ্র বাড়ালে দুর্দশা কমবে বলে জানান ডিলাররা।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সুত্রে জানাগেছে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন ও স্বল্প আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নালিতাবাড়ী উপজেলায় খাদ্য অধিদপ্তরের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস)এর জন্য পৌরসভায় ছয়(৬) ডিলার রয়েছেন। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ভর্তুকি মূল্যে আটা বিক্রি শুরু হয়েছে। সরকারের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন দুই জন ডিলার আটা বিক্রি করতে পারবে। একজন ডিলারের জন্য বরাদ্দ ৫০০ কেজি। প্রতিকেজি আটার বিক্রয় মূল্য ২৪ টাকা। একজন সর্বোচ্চ ৫ কেজি আটা নিতে পারেন। সে হিসেবে একজন ডিলারের কাছ থেকে একশত জন মানুষ আটা কিনতে পারেন। একজন ডিলার সপ্তাহে দুইদিন আটা বিক্রি করতে পারে। সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত বিক্রি করার নিয়ম রয়েছে। কিন্ত ঘন্টা না পেরুতেই বিক্রি শেষ হয়ে যায়।
ছালুয়াতলা গ্রামের ছামিরুন নেছা(৪৫)বলেন,আমগর গেরাম থাইকা হাইট্টা এইনে আইতে এক ঘন্টা সুময় লাগে। তাই ফজরের নামাজ পইড়া হাটা দেই। কোন দিন পাই আবার কোন দিন পাইনা। খালি হাতেই চইলা যাই।
ভেদীকুড়া গ্রামের জামাল উদ্দিন(৫৫) বলেন,সব জিনিষের দাম বাড়তি তাই সংসারের আয় কমে যাওয়ায় কষ্টকর পরিস্থিতি সহ্য কইরাও লাইনে দাঁড়াই। কোনো দিন পাই, আবার কোনো দিন খালি হাতে ফিরি। খুব সকালে বাড়ী থাইকা রৌনা দেই। তবুও আইসা দেহি লম্বা লাইন। ৫ কেজি আটা কিনতে আইয়া যুদ্ধ করতে হয়। সরকার যদি বরাদ্দ ও বিক্রয় কেন্দ্র বাড়াইতো তাইলে এতো কষ্ট অইতো না।
গড়কান্দা এলাকার ওএমএস ডিলার মো.সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বরাদ্দ অনুযায়ী দিনে ১০০ জনের কাছে আটা বিক্রি করতে পারি। কিন্তু লাইনে থাকেন চার-পাঁচ গুণ বেশি মানুষ। এ কারণে অধিকাংশ মানুষ খালি হাতে ফিরে যান। আমরা আবেদন জানিয়েছি বিক্রয় কেন্দ্র বাড়ানো এবং আটা একটন ও চাল একজন বরাদ্দ দেওয়ার জন্য।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো.এম.এন. রফিকুল আলম বলেন,সরকারী ভাবে এখন যা বরাদ্দ পাওয়া গেছে তাই দেওয়া হচ্ছে। তবে মানুষের চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ খুব কম হওয়ায় আমি অফিসিয়ালি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি ।
Leave a Reply