নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় সুতিয়ার খাল খননের পায়তারায় সেঁচ সঙ্কটে প্রায় ৪০০ একর আবাদী জমি। এ ছাড়াও সেঁচের অভাবে আরো প্রায় ৪০০ একর অনাবাদী রয়েছে। খাল খননের প্রতিবাদে মানবন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। আজ শুক্রবার(০৯ ফেব্রুয়ারী) সকালে সুতিয়ারপাড় বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন।
এলজিইডি ও এলাকাবাসী জানান, ২০১১ সালে এলাকার সাংসাদ মতিয়া চৌধুরী কৃষিমন্ত্রী থাকাকালীণ সময়ে জাইকার অর্থায়নে ফুলপুর বান্দের বাজার এলাকায় ভোগাইনদী থেকে পানি উত্তোলণের জন্য পানি দুটি হাইপাওয়ার সেলো মেশিন ও একটি কার্যালয় ও সুতিয়ার খাল খনন ও খালের ১০ কিলোমিটার ভাটিতে একটি স্লুইচ গেট নির্মাণ করা হয়। এতে উপজেলার নালিতাবাড়ী,রামচন্দ্রকুড়া ও কাকরকান্দী ইউনিয়নের প্রায় ৮০০ একর অনাবাদী জমি সেঁেচর আওতায় আসে। এরপর থেকে তিনটি ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের কৃষকরা স্বল্প টাকা খরচ করে সেঁচ সুবিধা পেয়ে সুতিয়ার খালে প্রায় ৩৫টি সেলু মেশিন দিয়ে বোর আবাদ করছেন। এ সকল কিছু ব্যাবস্থাপনার জন্য “সুতিয়ার খাল পানি ব্যাবস্থাপনা সমবায় সমিতি” গঠন করা হয়। সমিতির ৭৫৬ জন সদস্য রয়েছে। চলতি বোর মৌসুমের জন্য প্রায় ৪০০ একর জমি লাগানো শেষ হয়েছে। আরো প্রায় ৪০০ একর জমি আবাদের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। সম্প্রতি জাইকার অর্থায়নে ভাটিতে আরো একটি স্লুইচগেট ও খালখনন করার অর্থ বরাদ্দ পান এলজিইডি।
খাল খননের জন্য প্রায় এক কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। নিয়মে রয়েছে খাল খননের জন্য সমিতির সদস্যদের নিয়ে লেবার কন্ট্রাক্টিং সোসাইটি(এলসিএস)কমিটি গঠন করে তাদের দিয়ে খনন কাজ করা। ২৫ জন সদস্য নিয়ে ১০ টি এলসিএস কমিটি গঠিত হবে। কিন্ত ভুয়া এলসিএস কমিটি দেখিয়ে তাদের দিয়ে কাজ না করে এলজিইডি ভুয়া ঠিকাদার দেখিয়ে বেকু দিয়ে খাল খনন কাজ শুরু করার জন্য গত ০৩ ফেব্রুয়ারী উদ্বোধন করেন। এ সময় কৃষকরা বাদী হলে খনন কাজ বন্ধ রাখা হয়। এরপর ০৪ ও ০৫ তারিখে আবার খনন কাজ শুরু করেন কৃষকরা আবার বন্ধ করে দেন। ০৭ ফেব্রুয়ারী এজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো.মোস্তাফিজুর রহমান সরেজমিনে কৃষকদের সাথে কথা বলেন। কৃষকদের দাবীর প্রেক্ষিতে নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকল্পের সময় বৃদ্ধির জন্য উর্ধবতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলে জানান। কিন্ত চতুর্থ দফায় ০৮ ফেব্রুয়ারী আবার বেকু দিয়ে খননকাজ শুরু করেন। এ সময় কৃষকদের সাথে এলজিইডির কর্মকর্তাদের ধস্তাধস্তি ও মারামরি হয়। এতে চারজন আহত হয়ে নালিতাবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। খাল খননের প্রতিবাদে আজ এলাকাবাসী সুতিয়ারপাড় বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন।
পলাশিয়া গ্রামের আমিরুল ইসলাম(৪৫) বলেন,খালে এমনিতেই পানি নাই। এরমধ্যে খাল খনন করলে আমরা পানি পামু না। আমি এক একর জমি লাগাইছি। অহন পানির লাইগা জমিতে ঘাসমারা বিষ দিবার পাইতাছিনা। আগে জানাইলে আমরা এ বছর আবাদ বন্ধ রাকতাম।
হাতিবান্দা গ্রামের ইয়াকুব আলী(৪০)বলেন,আমার চার একর পানির লাইগা লাগাইবার পাইতাছিনা। এরমধ্যে আবার খাল খনন করলে আমরা পানি পামু কই। তাই আমগর দাবী আবাদ উঠলে পরে খাল খনন করা হোক।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো.মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,আমি সরেজমিনে কৃষকের সাথে কথা বলেছি,তাদের দাবীর প্রেক্ষিতে উর্ধবতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। জাইকার অর্থায়নে সময়মত কাজটা করতে না পারলে অর্থ ফেরত যাবে আর এমপি মহোদ্বয়ের কাছের লোক গোপাল সরকারের সাথে কথা বলে আজ আবার কাজ শুরু করার সময় আমার লোকজনকে ওই এলাকার লোকজন মারধোর করে।
Leave a Reply