নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি
মানুষের বাড়ী ঘরে পানি ঢুকছে পানি। কোথাও হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি। পৌরশহরের ও গ্রামীণ সড়ক, ফসলি জমি তলিয়ে গেছে পানিতে। ভেসে গেছে পুকুর ও খামারের মাছ। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় এমনই অবস্থা শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে। গত রাতের টানা বর্ষণে ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর পাড় উপচে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
জানাগেছে, গতরাত থেকে টানা বৃষ্টির সঙ্গে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ভোগাই ও চেল্লাখালী নদী দিয়ে তীব্র বেগে ভারত থেকে আসছে পানি। এতে উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া,নালিতাবাড়ী, মরিচপুরান, যোগানীয়া,বাঘবেড় নয়াবিল,পোড়াগাঁও ইউনিয়নের এবং পৌরশহরে প্রবেশ করছে। টানা বৃষ্টি ও ঢলের পানিতে পানি বেড়ে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে ভেসে গেছে পুকুর ও খামারের মাছ । গতকাল রাত থেকে বৃষ্টি ও ঢলের পানি ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। আজ সকালে ৫৬ সেন্টিমিটার বিপদ সিমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও ১২ টার দিকে তা ৭১ সেন্টিমিটার বিপদ সিমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আর ১২ টা পর্যন্ত বৃষ্টি ২২৫ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, গত ১০ বছরের মধ্যে নদীটিতে এত পানি দেখেননি তাঁরা। হঠাৎ এ পানি বৃদ্ধির কারণে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। পৌরশহরের তারাগঞ্জ বাজার, নালিতাবাড়ী বাজারের প্রধান সড়কে কোথাও হাটু পানি কোথাও কোমর পানি। ব্যবসায়ীদের দোকানে পানি উঠতে শুরু করেছে। আর বাসা বাড়ীতে পানি উঠায় মানুষের চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর তীরবর্তী মানুষ ঘরের আসভাবপত্র সড়িয়ে উচু যায়গায় নেওয়ার চেষ্ঠা করছেন। নদীর পানি প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে আমন ধান তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকের চিন্তার ভাজ পড়ছে। আমন ধানে কোথাও কোথাও থোর এসে গেছে। কিছুদিন গেলেই ধান গুলো শীষ বের হবে। অপরদিকে, নালিতাবাড়ী- গাজীরখামার- শেরপুর সড়কে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবাহিত হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ভুক্তভোগীরা জানান, ঢলের পানিতে নিম্নাঞ্চলের কৃষকের আমন ধান, সবজিখেত ও অসংখ্য পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ঢলের পানি নেমে গেলে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে বলে তারা জানান।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো.আবদুল ওয়াদুদ বলেন,নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে পাড় উপচে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এই পানি আশা করছি দ্রুত নেমে যাবে। তাতে কৃষকের কোন ক্ষতি হবে না। এরপরও কৃষক যদি ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে সরকারী ভাবে প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) মাসুদ রানা বলেন, উপজেলার দুটি নদীতে পাহাড়ী ঢলের পানি নদীর কিনারা উপচে গিয়ে বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। চারটি ইউনিয়নের সকল বিদ্যালয় খোলা রাখা হয়েছে। যারা আশ্রয় নিবে তাদেও জন্য শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে ।
Leave a Reply